সম্প্রসারিত মহাজোটে কাদের সিদ্দিকি!!স্বপ্ন ভঙ্গের ঝুঁকিতে যুক্তফ্রন্ট!!

হাসিনার হেট্রিক বনাম নির্বাচনে বিএনপির বিজয়!! কোন পথে এগোচ্ছে বিএনপির ভবিষ্যৎ!!দেখুন বিস্তারিত আওয়ামী লীগ সভানেত্রী এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ইদানীংকালের বক্তৃতা-বিবৃতি, নানান মন্তব্য এবং নিজ দলের নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে প্রদত্ত আদেশ-উপদেশ পর্যালোচনা করে মনে হয়েছে আগামীর সংসদ নির্বাচন সম্পর্কে তিনি ভিন্নতর চিন্তা করেন। তিনি দেশের সাধারণ মানুষের মতো সরল সমীকরণে যেমন বিশ্বাসী নন তেমন তার দলের সিনিয়র নেতৃবৃন্দের কথাবার্তার সঙ্গে সহমত প্রকাশ করেন না। তিনি সরকারবিরোধীদের গতানুগতিক সমালোচনাকে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করে একটি প্রশ্নবোধক নির্বাচনের ফলভোগী হতে যেমন সম্মানবোধ বা স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন না তেমন অভিসম্পাতকারীদের খুশি করার জন্য নিজেকে এবং দলকে যে কোনো আজাব ও গজবের লক্ষ্যবস্তুও করতে চান না। তিনি বরং রাজনীতির চিরায়ত কূটনীতি, মেধা, প্রজ্ঞা ও কৌশলের সঙ্গে কঠোর পরিশ্রম এবং আন্তরিকতার সংযোগে একাদশ সংসদ নির্বাচনে জয়ী হয়ে টানা তৃতীয় মেয়াদের জন্য সরকার গঠন করতে চান। আজকের দিনে দেশীয় রাজনীতির চরম বাস্তবতা হলো— বিএনপি নামক দলটি সাংগঠনিকভাবে বিধ্বস্ত। দলটির প্রথম সারির নেতৃবৃন্দের মধ্যে সমন্বয়হীনতা, কারও কারও বিরুদ্ধে সরকারের সঙ্গে যোগসাজশের অভিযোগ এবং বেশির ভাগ নেতা মামলা-মোকদ্দমা, পুলিশি হয়রানি ও সরকারি দলের পেশিশক্তির হুমকি দ্বারা নানাভাবে নাজেহাল হতে হতে হতোদ্যম হয়ে পড়েছেন। দলের চেয়ারপারসন জেলখানায়। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান প্রবাসে। তার পরও বিএনপির জনসমর্থন কমে গেছে কিংবা বিএনপির ভোটাররা আওয়ামী লীগকে ভোট দেবেন এমন সম্ভাবনার কথা বদ্ধ উন্মাদরাও বলবেন না। বরং নির্বাচনের সময় পপুলার ভোট, নারী ভোটের একাংশ এবং সহানুভূতির ভোট যে বিএনপির দিকে যাবে না এমন গ্যারান্টি কেউ দিতে পারবে না। ফলে তাদের প্রায় বেশির ভাগ ভোটের সঙ্গে অন্যান্য ভ্রাম্যমাণ ভোটের সংযোগ ঘটলে কী ফলাফল হতে পারে তা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী খুব ভালো করেই জানেন। বিএনপির প্রধান সহযোগী জামায়াত সম্পর্কে আওয়ামী লীগের বেশির ভাগ নেতৃত্বই বেখবর। তারা মনে করেন, জামায়াতের অর্থনৈতিক ও সাংগঠনিক মেরুদণ্ড ভেঙে গেছে এবং বাংলাদেশের জামায়াত আগামী দিনগুলোয় মাথা তুলে দাঁড়ানো দূরের কথা, মাথা গোঁজার ঠাঁই পাবে না। জামায়াত সম্পর্কে আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দের চিন্তাভাবনা যে কতটা ভয়ঙ্কর রকম ভুল ও ভ্রান্তির দ্বারা আক্রান্ত তা বোঝা যায় দেশি-বিদেশি বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা, জরিপকারী প্রতিষ্ঠান ও রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের প্রতিবেদন মূল্যায়ন করলে। তাদের তথ্যমতে, জামায়াত একটি ক্যাডারভিত্তিক সংগঠন। আওয়ামী লীগ যেসব প্রতিষ্ঠানকে জামায়াতের অর্থনৈতিক ভিত্তির উৎস মনে করছে সেগুলো আসলে জামায়াতের নেতা-কর্মীদের মালিকানাধীন ব্যক্তিগত প্রতিষ্ঠান। জামায়াত মূলত পরিচালিত হয় কর্মীদের দেওয়া মাসিক ও বার্ষিক চাঁদার ভিত্তিতে। জামায়াত সম্পর্কে সাম্প্রতিক গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে যে, অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে তারা অর্থনৈতিক ও সাংগঠনিকভাবে শক্তিমত্তা অর্জন করেছে এবং তার অভীষ্ট লক্ষ্য অর্জন এবং প্রতিপক্ষকে আঘাত করার জন্য চুপটি করে ঘাপটি মেরে সুযোগের জন্য অপেক্ষা করছে। ছাত্রশিবির, ছাত্রী সংস্থার কর্মী সংখ্যা তারা জ্যামিতিক হারে বাড়িয়েছে। মূল দলের কর্মী সংখ্যা কতটা বাড়িয়েছে তা অনুমান করা যায় সাম্প্রতিককালে তাদের পরিসংখ্যান মূল্যায়ন করলে। জামায়াতের সাংগঠনিক ভিত্তির চালিকাশক্তির ঘূর্ণায়মান কেন্দ্র বা নিউক্লিয়াসের নাম রুকন। দলটির রুকন পদমর্যাদার কর্মীরাই হলো দলের প্রাণ। তারা আল্লাহর নামে শপথ গ্রহণ করে রুকন হিসেবে অভিষিক্ত হন। জামায়াতের সব কর্মী-সমর্থক কিংবা শিবিরে যোগদান করা সমর্থক ও কর্মীরা সারা জীবন ধরে স্বপ্ন দেখেন রুকনরূপে অভিষিক্ত হয়ে দলের জন্য নিজের জীবন, পরিবার ও সহায়-সম্পত্তি বিসর্জন দিয়ে গাজীরূপে বেঁচে থাকতে নতুবা মরে গিয়ে শহীদি মর্যাদায় জান্নাতলাভের জন্য। জামায়াতের একজন কর্মী যেদিন রুকন পদে অভিষিক্ত হন সেদিন থেকে তিনি তার মাসিক অথবা বার্ষিক আয়ের শতকরা দশ ভাগ থেকে শুরু করে ২৫ ভাগ পর্যন্ত অর্থ সংগঠনকে দান করেন। তারা দলের জন্য যে কোনো ঝুঁকি গ্রহণ, জীবন বিসর্জন অথবা দলকে সেবা করার মানস নিয়ে সর্বদা নিজেকে প্রস্তুত রাখেন। জামায়াতের প্রয়াত আমির গোলাম আযম যেদিন মারা গিয়েছিলেন সেদিন সারা দেশে রুকনের সংখ্যা ছিল ৫৫ হাজার যা বর্তমানে বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ৭০ হাজারে। আওয়ামী লীগের সাধারণ নেতা-কর্মীরা হয়তো তথ্য জানেন না অথবা যারা জানেন তারা হয়তো ৭০ হাজার রুকনকে নিজেদের ৭০ হাজার নেতা-কর্মীর মতো মনে করেন। কিন্তু আওযামী লীগ সভানেত্রী অবশ্যই তা মনে করেন না। কারণ তার কাছে হালনাগাদ সব গোয়েন্দা রিপোর্ট এবং প্রতিটি রিপোর্টের ত্রিমাত্রিক নিরাপত্তা বিশ্লেষণ উপস্থাপন করা হয়। ফলে তিনি উদ্ভূত পরিস্থিতিকে রাজনৈতিকভাবে, কূটনৈতিকভাবে অথবা প্রশাসনিকভাবে মোকাবিলার জন্য এমন কতগুলো সিদ্ধান্ত নেন, যা সাধারণ মন-মস্তিষ্ক আন্দাজ করতে পারে না। বিএনপি-জামায়াত ছাড়াও অন্যান্য রাজনৈতিক দল যথা জাতীয় পার্টি, সিপিবি, গণফোরাম, বিকল্পধারা, নাগরিক ঐক্য, বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ, ইসলামী ঐক্যজোট, ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলন ও হেফাজতে ইসলামকে কোনো সহজ সমীকরণে ফেলে সরকার এ মুহূর্তে কোনো সিদ্ধান্তে উপনীত হতে পারছে না। এ ছাড়া আ স ম আবদুর রবের জাসদ, বাসদ, জাকের পার্টি প্রভৃতি দলকে রাজনৈতিক ঐক্যের বাইরে রাখা এবার আদৌ সম্ভব হবে না। ফলে একাদশ সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে রাজনৈতিক ঐক্যের যে ঝড় শুরু হবে তা সামাল দিতে না পারলে টানা তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসার স্বপ্ন কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে তা এ মুহূর্তে বলা মুশকিল। বিস্তারিত ভিডিওতে দেখুনঃhttps://youtu.be/IXArrBlMqx0 আরও দেখুনঃ খালেদা এবং জিয়ার বিয়ের অজানা রোমান্টিক কাহিনী-দেখলে অবাক হবেন https://youtu.be/MAgcLuRzdwQ সবার আগে সব খবর পেতে আমাদের চ্যনেলটিতে সাবস্ক্রাইব করুনঃ http://bit.do/d8N83