লক্ষ টাকার হেলিকপ্টার বক্তাকে ‘’চরম শিক্ষা দিলেন’’ মোল্লা নাজিম উদ্দিন

প্রশ্নঃ ডাঃ জাকির নায়েক যে পোশাক পড়েন (কোট-প্যান্ট-টাই) এটা জায়েজ কি না ? সুন্নাতের খেলাফ কি না ?? উত্তরঃ পোশাক সম্পর্কে প্রথমে ১০টি প্রশ্নের উত্তর জানতে হবে ,তারপর পোশাকের সুন্নাত কি তা বুঝতে হবে । ১/ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কি নবুওয়াত প্রকাশের পর স্বীয় পোশাক পরিবর্তন করেছিলেন ?? ২/সাহাবায়ে কিরাম (রাঃ) কি ইসলাম গ্রহনের পর পোশাক পরিবর্তন করেছিলেন ?? ৩/রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কি আজীবন একই ডিজাইনের পোশাক পরেছেন ?? ৪/রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কি আজীবন একই রঙের পোশাক পরেছেন ?? ৫/হযরত আবু বকর সিদ্দীক (রাঃ) ও আবু জাহালের পোশাক কি প্রার্থক্য ছিল ?? ৬/ সকল সাহাবীগন কি একই ডিজাইনের পোষাক পরেছেন ?? ৭/সকল সাহাবী কি একই রঙের পোশাক পরেছেন ?? ৮/ কোন একজন সাহাবী কি আজীবন একই ডিজাইনের পোষাক পরেছেন ?? ৯/কোন একজন সাহাবী কি আজীবন একই রঙের পোষাক পরেছেন ?? ১০/ বর্তমানে প্রচলিত ডিজাইনগুলো (বর্তমানে ডিজাইনের পোশাকগুলো ) কি সাহাবায়ে কিরামের সময় ছিল কি?? প্রসঙ্গতঃ উল্লেখ্য যে অনেক আরব মুহাক্কিকীন পোষাকের সুন্নাত কবুল করেন নি , তারা এটাকে লেবাসে ইসলাম নয় ,বরং লেবাসে আরব (আরবদের পোষাক) বলেন । লেবাসের সুন্নাত নিয়ে উলামায়ে কিরামের মধ্য বিভিন্ন মত প্রার্থক্য আছে , ১/ কেউ বলেনঃ জামা গোল হতে হবে , লম্বায় কমপক্ষে নিছফ ছাক (হাঁটু ও গোড়ালীর মাঝখানে) হতে হবে । তাদের দলিল হলো । নবীজি (সাঃ) কখনো একমাত্র জামা গায়ে নামাজ আদায় করেছেন ।এখান থেকে বুঝা যায় তা কমপক্ষে নিছফ ছাক পরিমান লম্বা ছিল এবং গোল ছিল ।তাই এটাই সুন্নাত । ২/কেউ বলেনঃ জামা অবশ্যই নিছফ চাক (হাঁটু ও গোড়ালীর মাঝামাঝি) হতে হবে ,তবে ফাঁড়া হলেও চলবে । তাদের দলিল হলো - নবীজি (সাঃ) কখনো জামা গায়ে ঘোড়ার পিঠে চড়লে ,দেখা গেছে জামার কোনা বাতাসে উড়ছে ,এতে বুঝা গেল তা ফাঁড়া ছিল । তাই এতেও সুন্নাত আদায় হবে । ৩/ কেউ কেউ আবার উভয় মতের সমন্মের জন্য হাটুর নিচ পর্যন্ত সেলাই করা ও নিচে সামান্য ফাড়া রাখেন ৪/কেউ বলেনঃ জামায় ১টি মাত্র বুতাম হবে এবং কলার হবে না । ৫/কেউ বলেনঃ একাধিক বুতাম দেওয়া যাবে এবং কলার থাকলেও ক্ষতি নেই । ৬/কেউ বলেনঃ যে এলাকায় যেটাকে মানুষ ইসলামি পোশাক মনে করে তাতেই হবে । মূল কথা হলো - পোষাক সম্বন্ধে মহান রব্বুল আলামীন পবিত্র কুরআনে বলেন , "হে আদম সন্তান ! নিশ্চয় আমি তোমাদিগকে পোশাক দান করেছি ,যাতে তোমরা তোমাদের লজ্জা নিবারন করতে পারো ,এবং শোভা হিসেবেও ,আর তাকওয়ার পোষাক সে ই তো উত্তম । এ হলো আল্লাহর নিদর্শনসমূহ হতে আশা করা যায় তারা উপদেশ গ্রহন করবে । [সূরা আরাফ ২৬] যা বিধর্মিদের (ধর্মীয়) পোষাক নয় ,তা পরিধান করা জায়েয ,আর যে পোষাক পরিধান করলে ইসলামিক বা ধর্মীয় মনে হয় সে পোশাক পরিধান করা উত্তম । এখানে প্রশ্ন হলো , কোট টাই প্যান্ট বিধর্মীদের (ধর্মীয় ) পোষাক কি না ? কেউ কেউ মনে করেন এসব বিধর্মীদের (ধর্মীয়)পোষাক ,বিশেষতঃ টাই ত্রুশের চিন্হ ।তবে কোর্ট ,প্যান্ট ও টাই বিধর্মীদের (ধর্মীয়) পোষাক বলে প্রমানিত হয় না । কারন কোনো ইয়াহুদী ধর্মযাজক (রাহেব )কখনো এ পোষাক পরেন না , অনুরূপ কোন খিষ্টান ধর্মযাজক (পাদ্রী ও পোপ) কখনো এ পোষাক পরেন না , এমন কি হিন্দু ধর্মযাজক (ঠাকুর ও ব্রাক্ষন) এবং বৌদ্ধ ধর্মযাজক (ভিক্ষু ও পুরোহিত) তারাও এ পোষাক পড়েন না । এতে বুঝা গেল এসব তাদের কারোরই ধর্মীয় পোষাক নয় । বরং ইয়াহুদী ও খিষ্টান ধর্মীয় পোষাক মুসলিম আলেম ইমামদের পোষাকের মত (আলখেল্লা ও টুপি) এবং হিন্দু ও বুদ্ধদের ধর্মীয় পোষাক মুসলিম হাজীদের ইহরামের পোষাকের মতো (ধূতী ও চাদর) । শেষ কথা হলো যদি কেউ কোন পোষাককে সুন্নাত মনে করেন, কিন্তু অনিহা বসত আমল না করেন বা কোন পোষাককে সুন্নাতের খেলাফ মনে করেন তথাপি ও সৌখিনতা বসত তা পরিধান করেন তাহলে তিনি সুন্নাত তরককারী হিসেবে গন্য হবে অন্যথায় নয় ।