দম সাধনা বা শ্বাস-প্রশ্বাসের গোপন ভেদ || Mysterious Breathing || By Pirzada DM Rahat || Sufism BD

আমাদের দেহের মাঝে যত কার্য হচ্ছে তার মধ্যে শ্বাস-প্রশ্বাসই প্রধান কার্য। আধ্যাত্মিক সাধনায় এর গুরুত্ব বলে শেষ করা সম্ভব নয়। দেহের সব খবর এই শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমেই একজন সাধক জানতে পারে। তাই লালন সাঁইজি বলেছেন "ধর চোর হাওয়ার ঘরে ফাঁদ পেতে"। শ্বাস-প্রশ্বাসের খবর জানতে পারলেই দেহের মধ্যে সংঘটিত সকল কার্যের অগ্রীম সংবাদ পাওয়া যায়। কিন্তু দমের সাধনা ভাল মত জানতে পারলে ও করতে পারলে সাধক মিলনের ভাটার চন্দ্রকে (নিন্মমুখী বীর্য) উজান করে নিতে পারেন (উপরের দিকে তুলে নিতে পারেন)। তখন সাধক দমকে ব্রহ্মদ্বারে রুদ্ধ করে রাখার ফলে বীর্য তার ইচ্ছার বাইরে নির্গত হতে পারে না তার দেহ থেকে। এমন কি মৃত্যুর সংবাদ পর্যন্ত বলে দেওয়া যায় মৃত্যুর অনেক পূর্বেই। অন্যের ভবিষ্যতের শুভ ও অশুভ তথা আগুম নিগুম জানা যায়। এসব শুধু সেইসব সাধকদের জন্য, যাদের সাথে প্রভুর বন্ধুত্ব স্থাপন হয়েছে। শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমেই ছেলে সন্তান বা কন্যা সন্তান লাভ করা যায়, তবে যারা তাবিজ বা মন্ত্রের মাধ্যমে ছেলে সন্তান লাভের কথা বলে, তাদের কাছ থেকে দূরে থাকুন, কারন তারা বিজ্ঞান সম্পর্কে অজ্ঞ। সেসব ভন্ড ফকিরদের কাছ থেকে দূরে থাকুন। কারন সন্তান জন্মের বিষয়টা ছেলেদের বীর্যের সাথে সম্পর্কিত। শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে মানুষকে বশেও আনা যায় ইত্যাদি আরো কত কি গুনাগুন ও কার্য আছে এই শ্বাস-প্রশ্বাস সম্পর্কিত তা বলে শেষ করা যাবে না। গুরুত্বপূর্ণ কিছু তত্ত্ব তুলে ধরা হল। আমাদের দৈনিক ২১ হাজার ৬ শত বার দম তথা শ্বাস-প্রশ্বাস যাওয়া আসা করে। এক্ষেত্রে যারা পরিশ্রম অনেক বেশি করে তাদের আরো বেশিবার যাওয়া আসা করে। মানুষ যখন চুপচাপ বসে থাকে, অর্থাৎ স্বাভাবিক অবস্থায় থাকে , তখন শ্বাস বায়ু ১২ আঙুলী পরিমিত দূরে আসে, আর ভিতরে যায় ১০ আঙুল। খাওয়া দাওয়া ও কথা বলার সময় ১৮ আঙুল, হাটাহাটি করার সময় ২৪, দৌড়া দৌড়ী করলে ৩৪, মৈথুনকালে ৬৫ এবং নিদ্রাকালে ১০০ আঙুলী দূরে আসে। কিন্তু ভিতরে যায় মাত্র ১০ আঙুল। সাধকগন দম সাধনার মাধ্যমে এই শ্বাস-প্রশ্বাসের মাত্রা কমিয়ে আনে। তারা চেষ্টা কর যত কম দম বের করা নেওয়া যায়। ২১৬০০ বার এর থেকে কমিয়ে এনে তারা ১০ হাজার বার করার চেষ্টা করে। আপন দেহের মাঝেই পঞ্চতত্ত্বের উদয় হইতেছে প্রতি ঘন্টায় ক্রমান্বয়ে এক তত্ত্বের পর অন্য তত্ত্ব। তত্ত্ব গুলো হল নূর, বাদ, আতস, আব ও খাক তথা আকাশ, বায়ু, অগ্নি, জল ও পৃথিবী তত্ত্ব। অনেকেই শুধু জানেন যে এই পঞ্চ তত্ত্ব দিয়ে দেহ গঠন করা হইয়াছে। কিন্তু ইহা অধিকাংশ মানুষই জানে না যে, এই দেহের মাঝেই প্রতি ঘন্টায় এই পঞ্চ তত্ত্বের উদয় হইতেছে। দম সাধনা করিতে হইলে আপনাকে অবশ্যই আগে তত্ত্ব উদয় সম্পর্কে জানিতে হইবে। জানিতে হইবে কোন তত্ত্ব কতক্ষন উদিত থাকে, কোন তত্ত্বের পর কোন তত্ত্বের উদয় হয় ইত্যাদি। ইহা না জানিলে দম সাধনা করা সম্ভব নয়। তত্ত্ব নির্নয়ের অনেক সহজ সহজ পদ্ধতি রইয়াছে। সাধক গন এমনিতেই তত্ত্ব নির্নয় করিতে পারেন। তবে আপনারা যারা দম সাধনা সম্পর্কে অজ্ঞ তাহারাই যাতে তত্ত্ব নির্নয় করিতে পারেন, তাই সাধক গন তত্ত্ব নির্নয়ের বিভিন্ন পদ্ধতি জানিয়ে গেছেন জগতের কল্যানের জন্য। যে পদ্ধতি অবলম্বন করিয়া যে কোনো মানুষ নিজের তত্ত্ব নির্নয় করতে পারবে। আমি আমার পূর্বের পোস্ট গুলোতে এই নিয়ম উল্লেখ করেছি। দম সাধনায় পুরুষদের চেয়ে নারীদের কল্যান বেশি দেহ ঠিক রাখার জন্য ও উত্তম সন্তান জন্ম দেওয়ার জন্য। সেই বিষয়েও বিস্তারিত পূর্বে পোস্ট দেওয়া হয়েছে। লেখাঃ Pirzada DM Rahat জামালচর ছায়েদিয়া পাক দরবার শরীফ আধ্যাত্মিক অনলাইন গ্রন্থাগার। যেকোনো আধ্যাত্মিক বইয়ের জন্য যোগাযোগ করুন...... আধ্যাত্মিক অনলাইন লাইব্রেরী - Spiritual Online Library https://www.facebook.com/SpiritualLibraryBd