ইমাম মাহদি কোথা থেকে আসবেন? Imam mahdi kotha theke asben. By Masud Alam.

ইমাম মাহদী আগমনের পূর্ব লক্ষণ গুলো পর্যালোচনা করে দেখা গেছে সবকিছুই সমসাময়িক বা সম্প্রতি ঘটে গেছে। কোরআন বলছে, পৃথিবীতে যখন তার চাকচিক্য গ্রহণ করবে একেবারে লোভনীয়, কমনীয় সাজে সাজবে তখনই কেয়ামতের বার্তা চলে আসবে। পৃথিবী কি চাকচিক্য ও লোভনীয় সাজে সাজেনি? (২) শেষ যুগে খলিফাদের তিনজন সন্তান কাবা ঘরের গুপ্ত ধন ভান্ডারের কর্তৃত্ব নিয়ে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়বে, কেউই কারো উপর বিজয়ী হবে না। তখনই মক্কায় ইমাম মাহাদীর আগমন ঘটবে। এবং সবাই তার হাতে বায়াত গ্রহণ করবেন। এই সহিহ হাদিসটি সৌদী আরবের দিকে তাকালেই বুঝা যায় যে, এটিও খুব শীঘ্রই বাস্তবায়ন হতে যাচ্ছে। অতএব পরিবেশও অলরেডি তৈরি। (৩) ১৪০০ বছর আগে নবী (সাঃ) বলেছিলেন, ঈসা (আঃ) আসমান হতে দামেস্কের জামে মসজিদে পূর্ব সাদা মিনারের উপর দিয়ে এ পৃথিবীতে অবস্থান করবেন। সেই মসজিদ ও সাদা মিনারও রেডি। (৪) বিশ্বব্যাপী যখন সুদের উপর রাজত্ব চলবে তখন তোমরা দেখবে মসজিদের ইমাম হবে বেঈমান, মুয়াজ্জিন হবে বেঈমান এমনকি মসজিদে ভর্তি সব মুসল্লি হবে বেঈমান একজন ইমানদার ব্যক্তিও খুঁজে পাওয়া যাবে না। এটা আমার কথা নয়। নবী (সাঃ) বলেছেন। সেই জামানায় কি আমরা বসবাস করছি না। (৫) একমাত্র গারকাদ নামক গাছ ইহুদীদের কে আশ্রয় দেবে। এ জন্যেই বর্তমান ইহুদীরা দখলকৃত ফিলিস্তিনি এলাকায় এ জাতীয় খুব বেশী করে লাগাচ্ছে। মসজিদ আল আকসার চার দিকেও এ গাছ প্রচুর পরিমানে লাগানো হচ্ছে। কারণ তারা জানে মুসলমানরা তাদেরকে পেলে কচু কাটা করবে। (৬) যে সমস্ত মুসলমান গান-বাজনা ও টিভিতে অর্ধলঙ্গ নারী পুরুষের ফাহেশা ছবি নাটক, সিরিয়াল দেখেন তাদের জন্য দুঃসংবাদ যারা একাজে মত্ত হবে তাদেরকে তিন ধরনের শাস্তি দেয়া হবে। নবী (সাঃ) বলেন-’ (১) মাটির নিচে দাবিয়ে দেয়া হবে (২) উপরে উঠিয়ে নিক্ষেপ করে ধ্বংস করা হবে (৩) চেহারা পরিবর্তন করে শুকুর ও বানর পরিণত করা হবে। তবে চেহারা পরিবর্তনের ঘটনা সম্ভবত এখনও ঘটেনি। যেহেতু নবী (সাঃ) বলেছেন শেষ জামানায় হবে আমরা মুসলিম হিসাবে বিশ্বাস করি যারা গান-বাজনা ও গায়ক -গায়িকা নিয়ে ব্যস্ত থাকবে তাদের উপরে চেহারা বিকৃত করার শাস্তি অবশ্যই আসবে। বিশ্বনবী (সাঃ) তার বাণীতে বলে গেছেন, যখন কিয়ামত খুবই কাছে এসে যাবে, এজন্য তিনি কিয়ামত নিকটবর্তী হওয়ার কতগুলো আলামত জানিয়ে দিয়ে গেছেন। আলামতগুলো হলো- (১) মানুষ ব্যাপক হারে ধর্মবিমুখ হবে। ২) বিভিন্ন রকমের পার্থিব আনন্দ এবং রং-তামাশায় মেতে থাকবে ৩) মসজিদে বসে দুনিয়াদারীর আলাপ-আলোচনায় লিপ্ত হবে। ৪) সমাজে ও রাষ্ট্রে অযোগ্য লোক এবং মহিলা নেতৃত্ব শুরু হবে। ৫) মানুষের মধ্যে ভক্তি শ্রদ্ধা, ¯েœহ, ভালোবাসা কমে যাবে। ৬) ঘন ঘন ভূমিকম্প হতে থাকবে। ৭) সব দেশের আবহাওয়া ব্যাপক পরিবর্তন দেখা দিবে। ৮) অত্যাধিক শিলা বৃষ্টি হবে। ৯) মানুষের রুপ পরিবর্তিত হয়ে পুরুষ স্ত্রী লোকের ন্যায় এবং স্ত্রীলোক পুরুষের রুপ ধারণ করবেন। ১০) ব্যাপক হারে হত্যাকান্ড বেড়ে যাবে। ১১) যখন মানুষ সম্পদ উপার্জনে হালাল-হারামের বাচ-বিচার করবে না। ১২) যাকাত আদায়কে জরিমানা মনে করবে। ১৩) জন্মদাতা পিতাকে দুরে ঠেলে দিয়ে বন্ধু-বান্ধবকে বেশী গুরুত্ব দিবে। ১৪) আল্লাহর ঘর মসজিদে উচ্চস্বরে চিৎকার করা। ১৫) মানুষের মৃত্যু কামনার হার বৃদ্ধি পাবে। ১৬) মসজিদগুলোকে অধিক সুসজ্জিত করার প্রতিযোগিতা চলবে। ১৭) ঘরবাড়ির ডিজাইনও সুসজ্জিত করা হবে। ১৮) আকাশ হতে অধিক হারে বজ্রপাত হয়ে মানুষ মারা যাবে। হঠাৎ মৃত্যুর হার বৃদ্ধি পাবে। ১৯) ইতর শ্রেণির লোকেরা বিশাল সম্পত্তির অধিকারী হবে। ২০) বাজার ও দোকানপাট নিকটবর্তী হয়ে যাবে। ২১) মুমিনের স্বপ্ন সত্য হবে। ২২) মিথ্যা ব্যাপক হারে ধারন করবে। ২৩) অশ্লীলতা, নোংড়ামী প্রদর্শন দেখা দেবে। ২৪) ভারী বৃষ্টি যা প্লাবন সৃষ্টি করবে। ২৫) মা তার মেয়ের কথা মতো চলবে। ২৫) স্যাটেলাইট, টিভি, চ্যানেল আবিস্কার। ২৬) প্রচুর বৃষ্টিপাত হবে ফসল হবে না। ২৭) জেনা-ব্যাভিচার বৃদ্ধি পাবে। ২৮) সুদখোরের সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে। ২৯) মদ্যপান হালাল মনে করবে। ৩০) মুসলমানরা শিরকে লিপ্ত হবে। ৩১) বেপর্দা নারীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে। এই আলামত গুলো যখন দেখা দিবে তখন কিয়ামতের বড় আলামতগুলো নিকটবর্তী হবে। বর্তমান এগুলো ব্যাপক হারে ঘটে যাচ্ছে সুতরাং কেয়ামত অতি সন্নিকটে। তাই আসুন আগে থেকেই সতর্ক হই। আল্লাহ ও রাসূল (সাঃ) এর আনুগত্য করি। সহিহ মুসলিমের একবারে প্রথম হাদিসটির কথাই ধরা যাক। এখানে কিয়ামতের আলামত সমূহ সম্পর্কে বলতে গিয়ে আমাদের নবী (সাঃ) বলেছিলেন, নগ্নপদ, বস্ত্রহীন রাখাল, বেদুইনরা অর্থাৎ যারা খাসি আর গরুর দেখাশোনা করে সেই নগ্নপথ বস্ত্রহীন রাখাল বেদুইনরা উচু বিল্ডিং বানানোর প্রতিযোগীতায় নামবে। নবী (সাঃ) কথাটি বলেছিলেন আজ থেকে ১৪০০ বছরেরও বেশী আগে। কিন্তু গত মাত্র এক দশকে আমরা এমনটি বাস্তবেই ঘটতে দেখছি। অমুসলিমরা যারা কিনা এই হাদিসটি সম্পর্কে অবহিত নয়, তারা পর্যন্ত বলতে শুরু করেছে যে, মধ্যেপ্রাচ্যের আরবরা আকাশচুম্বী অট্টালিকা তৈরির প্রতিযোগিতা মেতে উঠেছে। আমাদের চোখের সামনেই এত বড় মুজিযার বাস্তবায়ন ঘটে যাচ্ছে, এরপরও অস্বীকার করার কোন অজুহাত থাকতে পারে কি? কেয়ামত অনেক দুরে। আসলে কাফিরদের স্বভাব হচ্ছে কেয়ামতকে অনেক দুরে দেখা আর মুমিনদের আকিদা হচ্ছে কেয়ামতকে অতি নিকটে দেখা।